অর্থনীতি ডেস্ক: ঋণের কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে সংস্কার পদক্ষেপ দেখতে চলতি মাসেই ঢাকায় সফর করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি প্রতিনিধি দল (আইএমএফ)। সফরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), অর্থ মন্ত্রনালয়সহ কয়েকটি দফতরে গিয়ে সংস্কার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করে দলটি।
তবে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধিতে আশানুরুপ ফল না মেলায় এই ঋণদাতা সংস্থার মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। ঋণের শর্ত অনুযায়ী, চলতি অর্থ বছরের শেষ তিন মাসে দুই লাখ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করতে হবে। তাছাড়া, আগামী অর্থবছরে বাড়তি ৫৭ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় করতে হবে। এতে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধিতে বেশি চাপ তৈরি হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আইএমএফ’র এই চাওয়া কি বাস্তবসম্মত?
অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, কিছু ক্ষেত্রে আইএমফের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিৎ। তবে কিন্তু রাজস্ব ও জ্বালানির ভর্তুকির ক্ষেত্রে সংস্থাটির অবস্থানের পরিবর্তন দরকার। কারণ বাস্তবতার সাথে এটির মিল নেই। বিষয়টি নিয়ে সংস্থাটির সাথে আলোচনা প্রয়োজন।
আইএমএফ বাংলাদেশের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কার্যক্রম চলমান রেখেছে। এরইমধ্যে তিনটি কিম্তির অর্থ ছাড় হয়েছে। তবে বাকি অর্থ ছাড় করতে দফায় দফায় শর্ত দেয়া হচ্ছে। শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হলে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যাবে। ফলে সংস্থাটির পরামর্শে অর্থবছরের মাঝপথে এসে ঢালাও শুল্ক বাড়ায় অন্তর্বর্তী সরকার।
বিআইআইসিস গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর বলেছেন, এই মূহুর্তে জনগণের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানো হলে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে। এমনটা হলে অর্থনীতিতে বিশৃংখলা তৈরি হবে। এর দায়ভার তো সংস্থাটি নেবে না। বিষয়টি আইএমএফকে বোঝাতে হবে।
বলা হচ্ছে ভর্তুকি পুরোপুরি তুলে নেয়া সম্ভব না। উন্নত দেশগুলোও জনগণের স্বার্থে ভর্তুকি চালু রেখেছে।
ড. মাহফুজ কবীর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভর্তুকি দিয়ে থাকে। তারা কখনো ভর্তুকি প্রত্যাহার করেনি। বাংলাদেশের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে। দেশ একটি ক্রান্তিকাল পার করছে। এমন পরিস্থিতিতে সংস্থাটির বাংলাদেশের পাশে থাকা উচিৎ। তাদের পরামর্শগুলো মানা যাবে, তবে এখন নয়।
এদিকে, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ স্বস্তিদায়ক হওয়ায় ঋণের অর্থছাড় নিয়ে সরকার চিন্তিত নয়। তবে এই ঋণ ছাড়ের ওপর অন্য সংস্থাগুলো থেকে ঋণ প্রাপ্তি নির্ভর করছে।