চাকরীর নামে প্রতারণা করছে ইউনি ফোর্স সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড

সুইটি সিনহা : ১৯৮৮ সালে প্রথম সিকিউরিটি সার্ভিস প্রাইভেটভাবে দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এ পর্যন্ত ৮ শতাধিক প্রতিষ্ঠান এই সেবা প্রদান করছে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শপিংমল, কারখানা, মার্কেট, দোকানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাতে প্রহরীর দায়িত্ব পালনে সিকিউরিটির চাহিদা থাকায় এ খাতে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান দিন দিন বেড়েই চলেছে। তারই সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি গড়েছে তুলেছে নাম মাত্র সিকিউরিটি কোম্পানী। অনলাইন ও ডিজিটাল বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে সহজেই ফাঁদে ফেলছে দূর দূরান্ত থেকে আগত গরীব ও সহজ, সরল লোকদের। ম্যানেজার, সুপারভাইজার, অফিস সহকারী, মার্কেটিং অফিসার, পিয়ন, আয়া, গার্ডসহ অসংখ্য পদ ও তার বেতনের বর্ননা দিয়ে ডেকে আনা হয় চাকরীপ্রত্যাশীদের।
নাম সর্বস্ব প্রতারক এসকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম Uniforce Security Service Limited যাত্রাবাড়ী এলাকার দোলাইপাড় কবরস্থান রোডের সাবেক মদিনা ক্লিনিকের তিনতলাতে এই সিকিউরিটি কোম্পানীর অফিস অবস্থিত। মালিক উজ্জ্বল রায় ও পরিচালক শিহাব উদ্দিন এর নেতৃত্বে প্রতিনিয়ত এই অফিসে বসেই চাকরীর নামে প্রতারিত হচ্ছে হাজারো স্বপ্নবাজ বেকার তরুণ ও যুবক। তাদের টার্গেটে রয়েছে মার্কেটিং এ চাকুরী করতে আসা প্রার্থীরা। এই পদে চাকুরী করতে আসা বরিশালের ছেলে ভুক্তভোগী শান্ত জানান, পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবার এর হাল ধরতে চেয়েছিলাম। বেশ কিছু দিন ধরে চাকুরী খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ একদিন একটি চাকুরীর বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। ইউনিফোর্স সিকিউরিটি সার্ভিসে মার্কেটিং এর জন্য কিছু সংখ্যক লোক নিবে বেতন ১৮০০০ টাকা। যোগাযোগ করে অফিসে গেলে ম্যানেজার শিহাব আমার মগজ ধোলাই করে বলেন, মার্কেটিং এ আপনার কাজ হলো মোবাইলের মাধ্যমে চাকুরীর বিজ্ঞাপন দিয়ে নতুন লোক আনলে কমিশন পাবেন। এভাবে যত লোক ভর্তি করবেন, তত বেশি বেতন পাবেন। আর আপনার ১৫০০০ টাকা জামানত দিতে হবে। খাওয়া খরচ ৪৫০০ টাকা ও ভর্তি ফরম পূরন বাবদ ৫০০টাকা। শিহাব সাহেব আমাকে আরো বলেন, নির্ধারিত বেতন দিয়ে আপনি কি করবেন? কাজের পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তো আপনি মাসে ৬০-৭০হাজার টাকা অনায়সে আয় করবেন। পরিশেষে এই সিকিউরিটি কোম্পানীকে ১২০০০ টাকা প্রদান করে ভর্তি হয়েও বিবেকের তাড়নায় চাকুরী ছেড়ে মাত্র ৩দিন পরে খালি হাতে চলে আসি বলে জানায় ভুক্তভোগী শান্ত। এসকল বিষয়ে গত জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে সরেজমিনে ইউনিফোর্স সিকিউরিটি সার্ভিসের অফিসে গেলে দেখা যায়, পরিচালক শিহাবের নির্দেশনায় অভিনব কায়দায় প্রতারনা করছে কয়েকজন নামধারী মার্কেটিং অফিসারসহ রিসিপশনিষ্ট। সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেখলে মুহূর্তের মধ্যে সেখান থেকে ৫-৬জন পালিয়ে যায়। পরিচালক শিহাবের সাথে আলাপচারিতাকালে কম্পনীর বৈধতার সকল কাগজপত্র দেখাতে বললে অপারগতা স্বীকার করে বলেন মালিক উজ্জ্বল রায় এর কাছে সব কাগজ রয়েছে।অফিসে ফটোকপি সহ পোষ্ট লিষ্ট রাখা হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি কৌশলে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান। এসময়ে অফিসে উপস্থিত আর একজন ভুক্তভোগী মাওঃ রুহুল আমীন এর কাজে চাকুরীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের দেখাশোনা করার কাজে বেতন ১৯০০০টাকা দিবে বলে অফিসে এনে ভর্তি করে বলে সিকিউরিটির দ্বায়িত্ব পালন করতে হবে একটা মার্কেটে।তিনি আরো জানান মোট ৫০০০টাকা দিতে বললে আমি ৫০০ টাকা দিয়ে বাকি টাকা পরে নিতে বলায় তারা নারাজ। পরবর্তীতে মুঠোফোন এর মাধ্যমে রুহুল আমীন জানায় আজও তাকে চাকুরী দেননি ইউনিফোর্স সিকিউরিটি কোম্পানী।
এছাড়াও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় মাঝে মধ্যেই ভুক্তভোগীরা এখানে এসে পাওনা টাকার জন্য ঝামেলা করে বলে জানেন।এবং প্রতারণা করার জন্য বিভিন্ন সময় এখানে পুলিশ আসার সত্যতাও তারা নিশ্চিত করেন।
হাজারো প্রতারনার পরেও এখনও বহাল তবিয়তে কিভাবে এই প্রতিষ্ঠানটি এখানে পরিচালিত হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তর সকলেরই অজানা।
সচেতন মহল জানায়, এ ধরনের প্রতারক চক্রকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা জরুরি।এবং তারা আহ্বান করেন এসকল চক্রের ফাঁদে জানো কেউ পা না দেন। এবং চাকুরী নেওয়ার আগে প্রতিষ্ঠানের বৈধতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়ে নিবেন।

নিউজটি আপনার স্যোসাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *